Posts

Showing posts from April, 2025

প্রকৃতির সঙ্গে বসবাস ।

 প্রকৃতির সঙ্গে বাস করুন – মোঃ শাহাদৎ হোসেন মানুষ সভ্যতার উচ্চ শিখরে পৌঁছেছে। প্রযুক্তি, শিল্প এবং বিজ্ঞানের অবদানে জীবন সহজ হয়েছে, কিন্তু এই আরাম ও আধুনিকতার পেছনে আমরা ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছি আমাদের আসল পরিচয় — প্রকৃতির সন্তান হওয়ার পরিচয়। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, যখন দূষণ, রোগ, এবং মানসিক চাপ আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে, তখন প্রকৃতির কোলে ফিরে যাওয়াই মানবজাতির টিকে থাকার অন্যতম প্রধান পথ। এবং এটা আজকের সভ্যতায়ও পুরোপুরি সম্ভব — শুধু চাই সচেতনতা এবং সদিচ্ছা। কেমিক্যাল মুক্ত, প্রকৃতিনির্ভর জীবন: বাস্তব উপায়সমূহ ১. বাসস্থান: টেকসই, পরিবেশবান্ধব ঘর এখন উন্নত বিশ্বে "Eco-friendly Homes" বা "Green Building" ধারণা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাঁশ, মাটি, পাটের তৈরি ইট (Compressed Earth Blocks), সোলার প্যানেল ইত্যাদি ব্যবহার করে আধুনিক অথচ প্রকৃতি-ঘনিষ্ঠ ঘর বানানো হচ্ছে। ছাদে বাগান, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক বায়ু চলাচলের জন্য খোলামেলা নকশা — এই সবই এখনকার বাস্তবধর্মী উদ্যোগ। ২. খাদ্য: নিজের উৎপাদিত বা স্থানীয় জৈব খাদ্য বিশ্বজুড়ে এখন "Urban Farming" ব...

নিজ অবস্থান থেকে দেশপ্রেম।

 নিজ অবস্থান থেকে দেশকে যেভাবে ভালবাসা যায়। - মোঃ শাহাদৎ হোসেন দেশপ্রেম শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে রক্ত ঝরানোর নামই কেবল নয়, এটি প্রতিদিনের জীবনযাপনের একটি আদর্শ ও দায়িত্ববোধ। একজন নাগরিক যখন নিজের দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে পালন করেন, তখনই প্রকৃত দেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটে। আমরা যেই পেশাতেই থাকি না কেন, নিজের অবস্থান থেকে দেশকে ভালোবাসা সম্ভব — বরং সেটাই দেশপ্রেমের সবচেয়ে কার্যকর এবং টেকসই রূপ। আমি একজন শিক্ষক। আমার কাজ জ্ঞান বিতরণ করা, আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করা। আমি যদি শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শুধু পাঠ্যবই পড়িয়ে দিই, তাতে হয়তো চাকরি হচ্ছে, কিন্তু দেশপ্রেমের কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে না। কিন্তু যখন আমি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলি, তাদের সৎ, দায়িত্বশীল এবং মানবিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট থাকি — তখনই আমি আমার অবস্থান থেকে দেশপ্রেমের প্রকৃত চর্চা করি। একজন কৃষক, যখন জমিতে পরিশ্রম করে খাদ্য উৎপাদন করেন, একজন চিকিৎসক যখন আন্তরিকভাবে রোগীকে সেবা দেন, একজন শ্রমিক যখন ইট-পাথরের ভেতরেও সততা বজায় রাখেন, তখনই দেশ গঠনের ভিত শক্ত হয়। আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ ন...

সবার সাথে ভাল সম্পর্ক

শিরোনাম: সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখার শিল্প লেখক: মোঃ শাহাদৎ হোসেন আমরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে চলি—পরিবার, সহকর্মী, বন্ধু, প্রতিবেশী কিংবা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখা যেমন চ্যালেঞ্জিং, তেমনি এক ধরনের শিল্পও বটে। মানুষ সামাজিক জীব—এই বাক্যটা যতটা সহজ, এর মর্মার্থ ঠিক ততটাই গভীর। আমি শিক্ষকতা পেশায় থাকার সুবাদে মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার এই শিল্পটাকে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে উপলব্ধি করেছি। আজকের এই লেখায় আমি বলবো কীভাবে আমরা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারি—সহজ ভাষায়, বাস্তবতায় ভর করে। ১. শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির চর্চা করুন প্রত্যেক মানুষই চায় সম্মান পেতে। আপনি কারো সঙ্গে কথা বলার সময় তার মতামতকে গুরুত্ব দিন। শ্রদ্ধা দিন, বয়স হোক বড় কিংবা ছোট। কাউকে ছোট করে কথা বললে তা সম্পর্ক নষ্ট করে, আর একটু সম্মান দিলে সম্পর্ক গড়ে উঠে মজবুত ভিত্তির ওপর। ২. শোনা শিখুন, বলার চেয়ে বেশি অনেক সময় আমরা শুধু বলতেই ব্যস্ত থাকি, কিন্তু শুনি না। অথচ ভালো শ্রোতা হওয়া মানেই অন্যকে গুরুত্ব দেয়া। কোনো বন্ধু, সহকর্মী বা পরিবারের সদস্য কিছু বললে মনোযোগ দিয়ে শুনুন। এ...

জীবনকে উপভোগ করার উপায়

 জীবনকে উপভোগ করার উপায় - মোঃ শাহাদৎ হোসেন জীবন এক মহামূল্যবান উপহার। তবে এই উপহার তখনই সার্থকতা পায়, যখন আমরা তা পুরোপুরিভাবে উপভোগ করতে শিখি। দুঃখ-কষ্ট, সাফল্য-ব্যর্থতা, আনন্দ-বেদনার সংমিশ্রণে গঠিত এই জীবনকে কেবল সঠিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমেই উপভোগ করা সম্ভব। এখানে আমি আমার অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি থেকে কিছু উপায় তুলে ধরছি, যা আমাদের জীবনকে আরও সুন্দর ও পরিপূর্ণ করে তুলতে পারে। ১. কৃতজ্ঞতা চর্চা করুন প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক মুহূর্ত সময় নিয়ে ভাবুন, আপনি কী কী পেয়েছেন জীবনে। পরিবার, বন্ধুত্ব, স্বাস্থ‌্য, কর্মসংস্থান—এই সবকিছুই উপভোগের অন্যতম উপাদান। কৃতজ্ঞ মানুষ কখনও হতাশায় ডুবে থাকেন না। ২. প্রত্যাশার ভার কমান অতিরিক্ত প্রত্যাশা আমাদের জীবনের আনন্দ নষ্ট করে দেয়। নিজের ও অন্যের কাছ থেকে অযথা বেশি কিছু চাওয়ার ফলে হতাশা জন্ম নেয়। প্রত্যাশা কমিয়ে কৃতজ্ঞতা বাড়ালে জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তও অসাধারণ হয়ে ওঠে। ৩. নিয়মিত প্রকৃতির সংস্পর্শে আসুন প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো আমাদের মানসিক প্রশান্তি ও সৃষ্টিশীলতাকে বাড়িয়ে তোলে। প্রতিদিন অন্তত কিছু সময় খোলা আকাশ, গাছপালা, পাখির ডাক—এসবের মাঝে কাটান। ৪...

ভাল মানুষ হওয়াই বেশি জরুরি

 বড় চাকুরে হওয়ার চেয়ে সৎ নীতিবান ভাল মানুষ হওয়া জরুরি লেখক: মোঃ শাহাদৎ হোসেন এই সমাজে আমরা প্রায়ই দেখি—একজন মানুষকে তার পেশাগত পদ, আয় বা আর্থিক প্রতিষ্ঠা দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়। বাবা-মা সন্তানকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা প্রশাসনের বড় কর্মকর্তা বানানোর স্বপ্ন দেখেন। অথচ, মানুষ হিসেবে সত্যিকারের মূল্য কিসে তা অনেক সময়ই উপেক্ষিত থেকে যায়। আমার অভিজ্ঞতা, শিক্ষা এবং জীবনবোধ আমাকে বারবার একটি কথাই শেখায়—বড় চাকুরে হওয়ার চেয়ে সৎ, নীতিবান ও ভাল মানুষ হওয়া অনেক বেশি জরুরি। সাফল্যের প্রকৃত মানে সফলতা যদি শুধু চাকরির পদে সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে সেই সফলতা খুবই খণ্ডিত। একটি বড় পদে থাকা মানুষ যদি অসৎ হয়, অন্যায় করে, মানুষের অধিকার হরণ করে—তাহলে সেই ব্যক্তি সমাজের জন্য বোঝা ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যদিকে, একজন মাঝারি চাকরিজীবী বা সাধারণ মানুষ যদি নৈতিকতায় দৃঢ় থাকে, নিজের কাজ সৎভাবে করে এবং অন্যের উপকারে আসে—তবে সে-ই সমাজের জন্য আশীর্বাদ। সমাজের পরিবর্তন একজন নীতিবান মানুষ দিয়েই শুরু হয় একজন সৎ ও নীতিবান মানুষ চারপাশে আলো ছড়ায়। সে অন্যদের প্রেরণা জোগায়। তার কাছ থেকে সততা, দায়িত্ববো...

একজন শিক্ষার্থীর জীবনে নৈতিকতার গুরুত্ব

  একজন শিক্ষার্থীর জীবনে নৈতিকতার গুরুত্ব লেখক: মোঃ শাহাদৎ হোসেন বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে একজন শিক্ষার্থীর সাফল্যের মাপকাঠি কেবল তার পরীক্ষার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে না। একজন শিক্ষার্থী সত্যিকার অর্থে সফল তখনই হয়, যখন সে জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ হয়। শিক্ষার মূল লক্ষ্য হলো মানুষ গড়ার মাধ্যমে সমাজ ও জাতিকে উপকারে আসা। আর এই মানুষ গড়ার অন্যতম প্রধান উপাদান হলো নৈতিকতা । নৈতিকতা কী? নৈতিকতা মানে হচ্ছে মানুষের ভেতরের সৎ ও ন্যায়পরায়ণ দিক, যা তাকে ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা বেছে নিতে সাহায্য করে। এটি এমন এক অভ্যন্তরীণ গুণ, যা মানুষকে আত্মনিয়ন্ত্রণ, দায়িত্ববোধ এবং সততার চর্চায় উদ্বুদ্ধ করে। একজন শিক্ষার্থীর জীবনে নৈতিকতার ভূমিকা ১. চরিত্র গঠনে সহায়তা করে: শিক্ষার্থীর শৈশব ও কৈশোরকাল তার ব্যক্তিত্ব গঠনের শ্রেষ্ঠ সময়। এই সময় নৈতিক শিক্ষা তাকে সততা, সহানুভূতি ও শ্রদ্ধাশীলতা শেখায়। ২. সামাজিক সম্পর্ক উন্নত করে: একজন নৈতিক শিক্ষার্থী বন্ধু, শিক্ষক, এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করে। এতে তার চারপাশে বিশ্বাস ও সৌহার্দ...

দুঃখ কষ্ট থেকে দূরে থাকার উপায়।

 দৈনন্দিন জীবনে দুঃখ কষ্ট থেকে দূরে থাকার উপায়। মো: শাহাদৎ হোসেন  জীবন মানেই কখনো হাসি, কখনো অশ্রু। তবে আমরা সবাই চাই—যতটা সম্ভব সুখের মাঝে থাকতে, আর দুঃখ-কষ্টকে দূরে রাখতে। যদিও পুরোপুরি দুঃখ এড়ানো সম্ভব নয়, তবে কিছু উপায় আছে যা অনুসরণ করলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শান্তি ও মানসিক স্থিতি বজায় রাখা যায়। ১. আত্মজ্ঞান ও ইতিবাচক মনোভাব নিজেকে ভালোভাবে জানা, নিজের শক্তি ও দুর্বলতা বুঝে চলা একজন মানুষকে মানসিকভাবে অনেক স্থিতিশীল রাখে। প্রতিটি পরিস্থিতিতে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার চেষ্টা করুন। খারাপ সময়েও ভালো কিছু খুঁজে বের করা মনকে হালকা রাখে। ২. নিয়মিত মেডিটেশন ও নামাজ/ধ্যান মস্তিষ্কের শান্তির জন্য নিয়মিত মেডিটেশন বা নামাজ একান্ত জরুরি। ধ্যান বা প্রার্থনার মাধ্যমে নিজের মনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায়, যা মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। ৩. পর্যাপ্ত ঘুম ও স্বাস্থ্যকর খাবার মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সঠিক ঘুম না হলে মন খারাপ বা খিটখিটে হয়ে যায়। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে শরীর ও মন ভালো থাকে। ৪. নেগেটিভ মানুষ বা পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা সবসম...

আবার ফিরতে হবে যথাস্থানে

 আবার ফিরতে হবে যথাস্থানে – মোঃ শাহাদৎ হোসেন আমরা এমন এক সভ্যতায় বসবাস করছি, যেখানে যন্ত্র আমাদের জীবনযাত্রার মূল চালিকাশক্তি। ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানো পর্যন্ত, প্রতিটি মুহূর্তে কোনো না কোনো যন্ত্র আমাদের কাজে সহযোগিতা করছে। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ইলেকট্রিক গাড়ি, রোবট, অ্যালগরিদম—সব মিলিয়ে মনে হয় যেন আমরা এক পরিপূর্ণ যান্ত্রিক সমাজে পরিণত হয়েছি। কিন্তু একবার চিন্তা করুন—যদি কোনো একদিন এই যন্ত্রগুলো হঠাৎ করে থেমে যায়? এই প্রশ্ন কল্পনার মনে হলেও, বাস্তবে এটি একদিন আমাদের ভবিষ্যৎ হতে পারে। বৈদ্যুতিক শক্তির অভাব, সূর্য ঝড়, বৃহৎ মাত্রার সাইবার আক্রমণ, বা প্রযুক্তিগত অচলাবস্থা যদি একত্রে সংঘটিত হয়, তাহলে আমাদের বর্তমান যান্ত্রিক সভ্যতা সম্পূর্ণভাবে স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই পরিস্থিতিতে আর কোনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, বা ডিজিটাল সিস্টেম কাজ করবে না। মানুষকে আবার ফিরে যেতে হবে তার প্রাচীন চর্চায়—হাত-পা চালিত যন্ত্র, ম্যানুয়াল পদ্ধতি, সরল জীবন। আমি একজন শিক্ষক ও চিন্তাশীল নাগরিক হিসেবে মনে করি—এই বাস্তবতার জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। আমাদের প্রতিটি না...

অপরের দুঃখে ব্যথিত সুখে আনন্দিত।

 অপরের দুঃখে ব্যথিত আর আনন্দে খুশি হওয়া । মো: শাহাদৎ হোসেন মানবতা হলো এমন এক আলোকবর্তিকা, যা আমাদের হৃদয়কে আলোকিত করে। আমরা যখন অপরের দুঃখে ব্যথিত হই কিংবা আনন্দে খুশি হই, তখনই প্রকৃত মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি। এই গুণ আমাদের সামাজিক জীবনের গভীর মর্মবোধের পরিচায়ক। সহানুভূতির শক্তি বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিক হেলেন কেলার একবার বলেছিলেন,  “The best and most beautiful things in the world cannot be seen or even touched – they must be felt with the heart.” এই অনুভবের নামই সহানুভূতি। যখন আমরা অন্যের কষ্ট অনুভব করি, সেটা কেবল সহানুভূতি নয়, বরং মানবিকতার বাস্তব প্রতিফলন। প্রখ্যাত দার্শনিক জঁ-পল সার্ত্র বলেন,  “Man is nothing else but what he makes of himself.” যে মানুষ অন্যের দুঃখকে নিজের করে নেয়, সে-ই প্রকৃত অর্থে আত্ম-গঠনের পথে এগিয়ে চলে। আনন্দে অংশগ্রহণের মহত্ব অনেকেই অন্যের কষ্টে হয়তো পাশে দাঁড়ান, কিন্তু অন্যের আনন্দে শরিক হওয়া অনেক সময় বেশি কঠিন হয়। ঈর্ষা ও প্রতিযোগিতার এই যুগে অন্যের সাফল্যে আন্তরিক অভিনন্দন জানানো একটা বিরল গুণ। অ্যারিস্টটল বলেছিলেন,   “What i...

পড়ালেখা কিভাবে শুরু করব এবং কীভাবে করব

পড়ালেখা কিভাবে শুরু করব এবং কীভাবে করব।   মোঃ শাহাদৎ হোসেন *শিক্ষক, দোসাইদ কলেজ, সাভার, ঢাকা। প্রিয় শিক্ষার্থী,   তুমি হয়তো অনেক সময় ভাবো, “কীভাবে পড়ালেখা শুরু করবো?” কিংবা “আমি তো ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারি না।” এ সমস্যাগুলো খুব সাধারণ, এবং সঠিক দিকনির্দেশনায় তুমি নিশ্চয়ই সফল হতে পারবে। এই লেখায় আমি তোমাকে বুঝিয়ে দেব কীভাবে পড়াশোনা শুরু করতে হবে এবং কীভাবে সফলভাবে চালিয়ে যেতে হবে। ধাপ ১: লক্ষ্য নির্ধারণ করো** - **তুমি কোথায় যেতে চাও?** ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ব্যাংকার বা অন্য যেকোনো পেশা—যেখানে যেতে চাও, সেখানে পৌঁছাতে হলে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। - নিজের লক্ষ্যটা এক কাগজে লিখে দেওয়ালে লাগিয়ে রাখো।  **ধাপ ২: সময়সূচি তৈরি করো** - প্রতিদিন কতক্ষণ পড়বে তা ঠিক করো (যেমন: ৩ ঘণ্টা – সকালে ১ ঘণ্টা, বিকেলে ১ ঘণ্টা, রাতে ১ ঘণ্টা)।   - একটা সাপ্তাহিক রুটিন বানিয়ে ফেলো।   - সময় অনুযায়ী পড়ার বিষয় ভাগ করে নাও (যেমন: রোববার – গণিত, সোমবার – বাংলা, ইত্যাদি)। **ধাপ ৩: পড়ার কৌশল (Study Technique)** 1. **বোঝার চেষ্টা করো:** মুখস্থ করার আগে বিষয়টা বোঝো।...

আত্মবিশ্বাস ও সফলতা

আত্মবিশ্বাস কিভাবে গড়ে তুলি – একজন শিক্ষকের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে – মোঃ শাহাদৎ হোসেন আমার শিক্ষকতার জীবনে হাজারো ছাত্রছাত্রীকে আত্মবিশ্বাসের অভাবে থমকে যেতে দেখেছি। কেউ কেউ খুব মেধাবী, কিন্তু নিজের ওপর বিশ্বাস না থাকায় পিছিয়ে পড়ে। আবার কেউ আত্মবিশ্বাসের জোরেই অল্প পুঁজি নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যায়। তাই আজ আমি আমার নিজের জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার্থীদের উদাহরণ তুলে ধরবো, যেখান থেকে আপনি আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার কিছু কার্যকর কৌশল জানতে পারবেন। ১. নিজের শক্তি ও দুর্বলতা চিনে নেওয়া প্রথম শর্তই হচ্ছে  নিজেকে জানো । আমি যখন ছাত্র ছিলাম, তখন বুঝতাম আমি মৌখিকভাবে খুব ভালো ব্যাখ্যা করতে পারি, কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় অল্প নম্বর পাই। তখন নিজেকে প্রশ্ন করলাম—"আমি কীভাবে নিজের শক্তি কাজে লাগাবো?" এই আত্মবিশ্লেষণই ছিল আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি। ২. ছোট সাফল্যকে গুরুত্ব দেওয়া আমরা অনেক সময় বড় সাফল্যের পেছনে ছুটে ছোট অর্জনকে অবহেলা করি। অথচ আত্মবিশ্বাস তৈরি হয় ছোট ছোট জয় থেকে। আমি কলেজে প্রথম একটি ক্লাসে সফলভাবে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখতে পারার পর নিজেই নিজের প্রশংসা করেছিলাম—"তুমি পারো...
 শিক্ষণীয় উপদেশ মো: শাহাদৎ হোসেন  মানুষের জীবনে শিক্ষা হলো আলোর দিশারি। শিক্ষা শুধু পাঠ্যপুস্তক কিংবা পরীক্ষার খাতা অবধি সীমাবদ্ধ নয়; বরং শিক্ষা হলো জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে শেখা, অনুধাবন করা এবং প্রয়োগ করার এক ধারাবাহিক যাত্রা। তাই আজ কিছু শিক্ষণীয় উপদেশ নিয়ে আলোচনা করা যাক, যা আমাদের ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন এবং সমাজজীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। ১. নিজের ভুলকে স্বীকার করুন প্রত্যেক মানুষই ভুল করে, কিন্তু যিনি ভুল স্বীকার করতে জানেন, তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী। ভুলকে গোপন করা বা অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া আত্মোন্নয়নের পথে বড় বাধা। বরং ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে তা সংশোধনের প্রচেষ্টা মানুষকে আরো পরিণত করে তোলে। ২. সময়ের মূল্য দিন সময় একমাত্র সম্পদ যা হারালে ফেরত আসে না। অলসতা, অনিয়ম ও সময় নষ্ট জীবনের সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দেয়। তাই পরিকল্পনা করে সময়কে কাজে লাগাতে শিখুন। ছোট ছোট কাজকেও গুরুত্ব দিয়ে করুন। ৩. শ্রদ্ধা করুন—শিক্ষার প্রথম পাঠ শিক্ষক, পিতা-মাতা, জ্যেষ্ঠ ও সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও নম্রতা প্রদর্শন আমাদের মননশীল করে তোলে। একজন বিনয়ী মানুষ সমাজে যেমন সম্মান পায়...