একজন শিক্ষার্থীর জীবনে নৈতিকতার গুরুত্ব
- Get link
- X
- Other Apps
একজন শিক্ষার্থীর জীবনে নৈতিকতার গুরুত্ব
লেখক: মোঃ শাহাদৎ হোসেন
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে একজন শিক্ষার্থীর সাফল্যের মাপকাঠি কেবল তার পরীক্ষার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে না। একজন শিক্ষার্থী সত্যিকার অর্থে সফল তখনই হয়, যখন সে জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ হয়। শিক্ষার মূল লক্ষ্য হলো মানুষ গড়ার মাধ্যমে সমাজ ও জাতিকে উপকারে আসা। আর এই মানুষ গড়ার অন্যতম প্রধান উপাদান হলো নৈতিকতা।
নৈতিকতা কী?
নৈতিকতা মানে হচ্ছে মানুষের ভেতরের সৎ ও ন্যায়পরায়ণ দিক, যা তাকে ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা বেছে নিতে সাহায্য করে। এটি এমন এক অভ্যন্তরীণ গুণ, যা মানুষকে আত্মনিয়ন্ত্রণ, দায়িত্ববোধ এবং সততার চর্চায় উদ্বুদ্ধ করে।
একজন শিক্ষার্থীর জীবনে নৈতিকতার ভূমিকা
১. চরিত্র গঠনে সহায়তা করে: শিক্ষার্থীর শৈশব ও কৈশোরকাল তার ব্যক্তিত্ব গঠনের শ্রেষ্ঠ সময়। এই সময় নৈতিক শিক্ষা তাকে সততা, সহানুভূতি ও শ্রদ্ধাশীলতা শেখায়।
২. সামাজিক সম্পর্ক উন্নত করে: একজন নৈতিক শিক্ষার্থী বন্ধু, শিক্ষক, এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করে। এতে তার চারপাশে বিশ্বাস ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ গড়ে ওঠে।
৩. ভবিষ্যতের নেতৃত্বের ভিত্তি রচনায় সহায়ক: আগামী দিনের নেতৃত্ব গড়ার জন্য শুধুমাত্র মেধা নয়, নৈতিক দৃঢ়তা অপরিহার্য। নৈতিকতা ছাড়া নেতৃত্ব দুর্বল ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে।
৪. দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর: একজন নৈতিক শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে কোনো পদে অধিষ্ঠিত হলে সে নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থাকে। সে অন্যায়কে প্রত্যাখ্যান করে এবং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে।
৫. আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত করে: নৈতিকতা একজন শিক্ষার্থীকে তার নিজের উপর বিশ্বাস করতে শেখায়। সে স্বচ্ছ ও সৎ পথে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার আত্মবিশ্বাস অর্জন করে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিকতা
আজকের সমাজে প্রযুক্তি ও ভোগবাদিতার চাপে অনেক শিক্ষার্থী নৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে। তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতার চর্চা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি জরুরি। নৈতিক মূল্যবোধের অভাবে যেমন সমাজে অপরাধ ও বিশৃঙ্খলা বাড়ছে, তেমনি কমে যাচ্ছে মানুষের প্রতি মানুষের আস্থা ও শ্রদ্ধা।
উপসংহার
একজন শিক্ষার্থীর জীবনে নৈতিকতা শুধু একটি গুণ নয়, বরং এটি একটি শক্ত ভিত, যার উপর দাঁড়িয়ে সে একজন আদর্শ মানুষ ও সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। আমাদের উচিত পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সমাজজুড়ে নৈতিক শিক্ষার চর্চা ও প্রসার ঘটানো, যেন আমাদের শিক্ষার্থীরা কেবল ডিগ্রি অর্জনকারী নয়, বরং সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে পারে।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment