নিজ অবস্থান থেকে দেশপ্রেম।
নিজ অবস্থান থেকে দেশকে যেভাবে ভালবাসা যায়।
- মোঃ শাহাদৎ হোসেন
দেশপ্রেম শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে রক্ত ঝরানোর নামই কেবল নয়, এটি প্রতিদিনের জীবনযাপনের একটি আদর্শ ও দায়িত্ববোধ। একজন নাগরিক যখন নিজের দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে পালন করেন, তখনই প্রকৃত দেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটে। আমরা যেই পেশাতেই থাকি না কেন, নিজের অবস্থান থেকে দেশকে ভালোবাসা সম্ভব — বরং সেটাই দেশপ্রেমের সবচেয়ে কার্যকর এবং টেকসই রূপ।
আমি একজন শিক্ষক। আমার কাজ জ্ঞান বিতরণ করা, আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করা। আমি যদি শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শুধু পাঠ্যবই পড়িয়ে দিই, তাতে হয়তো চাকরি হচ্ছে, কিন্তু দেশপ্রেমের কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে না। কিন্তু যখন আমি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলি, তাদের সৎ, দায়িত্বশীল এবং মানবিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট থাকি — তখনই আমি আমার অবস্থান থেকে দেশপ্রেমের প্রকৃত চর্চা করি।
একজন কৃষক, যখন জমিতে পরিশ্রম করে খাদ্য উৎপাদন করেন, একজন চিকিৎসক যখন আন্তরিকভাবে রোগীকে সেবা দেন, একজন শ্রমিক যখন ইট-পাথরের ভেতরেও সততা বজায় রাখেন, তখনই দেশ গঠনের ভিত শক্ত হয়। আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ অবস্থানে দায়িত্ব রয়েছে, এবং সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করাই প্রকৃত দেশপ্রেম।
বর্তমানে দেশে অনেকেই দেশকে ভালোবাসার কথা বলেন, কিন্তু বাস্তবে তা প্রকাশ পায় না আমাদের কাজে। যদি একজন নাগরিক হিসেবে আমি ট্রাফিক আইন মেনে চলি, কর সঠিকভাবে প্রদান করি, সরকারি সম্পদের অপচয় না করি, তাহলে আমি নিজেই একজন দেশপ্রেমিক। দেশপ্রেম কোনো আলাদা কাজ নয়, এটি প্রতিদিনের সৎ ও দায়িত্বশীল আচরণ।
দেশপ্রেমের অর্থ শুধু আবেগ নয়, এটি একটি স্থায়ী মনোভাব, যা আমাদের আচরণ ও কর্মে প্রতিফলিত হয়। নিজের কাজ সঠিকভাবে করা, অন্যকে উৎসাহিত করা, সততা ও মানবিকতার পথে চলা — এ সবই দেশপ্রেমের প্রকাশ।
সুতরাং, আসুন আমরা প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে, নিজ কাজের প্রতি আন্তরিক হয়ে দেশপ্রেমকে জীবন্ত করে তুলি। তাহলেই গড়ে উঠবে একটি সুশৃঙ্খল, ন্যায়ভিত্তিক ও উন্নত বাংলাদেশ।
Comments
Post a Comment