Posts

শিক্ষককে শ্রদ্ধা উন্নতির গোপন মন্ত্র

শিক্ষককে শ্রদ্ধা উন্নতির গোপন মন্ত্র মোঃ শাহাদৎ হোসেন শিক্ষক হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। একজন দক্ষ কারিগরের হাতে যেমন কাঁচামাল থেকে তৈরি হয় মূল্যবান শিল্পকর্ম, তেমনি একজন শিক্ষকের হাতে গড়ে ওঠে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। তাই জাতি গঠনের জন্য শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। এই কারিগরকে উপেক্ষা করে, কিংবা তাঁর মূল্যায়ন না করে, প্রকৃত শিক্ষা বা উন্নতি কখনোই সম্ভব নয়। আমরা দেখেছি, কোন পণ্য ক্রয় করতে গেলে বিক্রেতা ক্রেতাকে সর্বোচ্চ সমীহ দেখায়। কিন্তু বিদ্যা এমন এক সম্পদ যা বিক্রেতার দোকানে পাওয়া যায় না। বিদ্যা অর্জনের জন্য প্রয়োজন শিক্ষকের সান্নিধ্য এবং শ্রদ্ধা। যদি কোন শিক্ষার্থী অন্তরে বা বাইরে মনে করে যে, বিদ্যা অর্থ দিয়ে কেনা যায়, তবে তার বিদ্যা অর্জন বৃথা হবে। কারণ সবকিছু কেনা গেলেও বিদ্যা আর জ্ঞান কেনা যায় না। এর জন্য চাই গুরুর প্রতি আনুগত্য ও সম্মান। শিক্ষক শুধু পাঠদান করেন না, তিনি প্রতিটি শিক্ষার্থীর সাফল্যের জন্য অন্তর থেকে দোয়া করেন। তবে এই দোয়া কেবল তখনই আসে, যখন শিক্ষার্থী শিক্ষকের হৃদয়ে বিশেষ জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়। নীতিহীন কিছু শিক্ষক হয়তো সমাজে আছে, কিন্তু তাতে শিক্ষকের প্রত...

অপরাধরা পরস্পর সর্ম্পকযুক্ত

অপরাধরা পরস্পর সর্ম্পকযুক্ত মোঃ শাহাদৎ হোসেন, সাভার মানব সমাজে অপরাধ একটি বহমান স্রোতের মতো। ছোট থেকে ছোট অপরাধের শিকড় যদি উপড়ে না ফেলা হয়, তবে তা বড় অপরাধের জন্ম দেয়। অনেকেই মনে করেন, সামান্য অন্যায় তেমন কোনো ক্ষতির কারণ নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো—সামান্য অপরাধই পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। ভিক্ষাবৃত্তি যেমন একটি ঘৃণিত কাজ, তেমনি রাস্তায় বা অন্য কোথাও পড়ে পাওয়া জিনিস নিজের মনে করাও কি কম অপরাধ? আমরা প্রায়শই দেখি, কারও হারানো সামান সামগ্রী তুলে নিয়ে নিজের করে নেয়া হয়। এটি হয়তো প্রকাশ্যে চুরি নয়, কিন্তু এক প্রকার নীরব চুরি। এ ধরনের কাজ মানুষের মনে অসৎ সাহস জন্ম দেয়, যা পরবর্তীতে বড় অপরাধে রূপ নিতে পারে। অনেকে অন্যের সম্পদের প্রতি লোভ করে—যা একধরনের অপ্রকাশিত অপরাধ। কিন্তু সেই লোভই যখন বাস্তবায়িত হয়, তখন সমাজে ঘটে বড় ধরনের ক্ষতি। উৎকোচ গ্রহণ বা ঘুষ নেওয়াও তাই এক ধরনের জুলম। এখানে কেউ হয়তো জোর করে কিছু কেড়ে নিচ্ছে না, কিন্তু অন্যায়কে মেনে নেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে। একদিকে পকেটমার সরাসরি ক্ষতি করে, অন্যদিকে ঘুষখোর নীরবে সমাজের ভিত দুর্বল করে দে...

শিক্ষকতা পেশা নিরর্থক

শিক্ষকতা পেশা নিরর্থক মোঃ শাহাদৎ হোসেন শিক্ষকতা পেশাকে বলা হয় মহান পেশা। কারণ শিক্ষকই একটি জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি সত্যিই আমাদের শিক্ষার্থীদের নৈতিকভাবে গড়ে তুলতে পারছি? কেবল পাঠ্যবই মুখস্থ করানো বা ভালো ফলাফল করানোই যদি শিক্ষার উদ্দেশ্য হয়, তবে শিক্ষকতা পেশা ধীরে ধীরে তার মূল তাৎপর্য হারাচ্ছে। আজকের সমাজে শিক্ষিত মানুষ চুরি করছে, ঘুষ নিচ্ছে, অনৈতিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে, দুর্নীতি করে রাষ্ট্রের ক্ষতি করছে। অথচ এরা সবাই কোনো না কোনো সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গণ্ডি পেরিয়েছে, শিক্ষকের কাছে পাঠ নিয়েছে। যদি শিক্ষিত মানুষই অশিক্ষিতদের মতো আচরণ করে, তবে কি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ নয়? একজন শিক্ষকের প্রধান দায়িত্ব কেবল জ্ঞান বিতরণ নয়, বরং শিক্ষার্থীর অন্তরে নৈতিকতার আলো জ্বালানো। যদি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা দান করতে ব্যর্থ হন, তবে সেই শিক্ষা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি শিক্ষার্থীদের নৈতিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে না পারে, তবে সেটিও সমাজের জন্য কোনো উপকার বয়ে আনে না। এক্ষেত্রে দোষ শুধু শিক্ষার্থীর নয়। শিক্ষার্থী...

ব্যর্থতার কারণ ও প্রতিকার এবং উত্তরণ ।

ব্যর্থতার কারণ ও প্রতিকার এবং উত্তরণ মোঃ শাহাদৎ হোসেন ভূমিকা মানুষের জীবনে সাফল্য যেমন আনন্দের, তেমনি ব্যর্থতা কষ্টের। কিন্তু ব্যর্থতা মানেই শেষ নয়—বরং এটি সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা। জীবনে যে ব্যক্তি ব্যর্থতার কারণ চিহ্নিত করতে পারেন এবং প্রতিকার খুঁজে পান, তিনিই প্রকৃত অর্থে উত্তরণের পথ খুঁজে পান। ব্যর্থতার প্রধান কারণ ১. অস্পষ্ট বা অবাস্তব লক্ষ্য লক্ষ্য নির্দিষ্ট না হলে তা অর্জন করা যায় না। আবার অনেক সময় লক্ষ্য এত বড় হয় যে বাস্তবসম্মত উপায় থাকে না। ২. পরিকল্পনার অভাব পরিশ্রম থাকলেও পরিকল্পনা না থাকলে সফল হওয়া কঠিন। সঠিক কৌশল ছাড়া শুধু শ্রম ফলপ্রসূ হয় না। ৩. সময় ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতা সময়কে অবহেলা করা মানেই ব্যর্থতার পথে হাঁটা। যারা সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে পারেন না, তারা সুযোগ হারান। ৪. অধৈর্য্য ও অস্থিরতা সাফল্য সময়সাপেক্ষ। কিন্তু ধৈর্য হারিয়ে মাঝপথে থেমে যাওয়া অনেক ব্যর্থতার মূল কারণ। ৫. আত্মবিশ্বাসের অভাব নিজেকে দুর্বল ভাবলে যেকোনো চ্যালেঞ্জ জয় করা কঠিন। আত্মবিশ্বাসহীনতা মানুষকে সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করে। ৬. পরিবেশ ও সুযোগের সীমাবদ্ধতা পারিবারিক সমস্যা, আর্থিক ...

মানব সম্পদ কখনও বোঝা হবে না

মানব সম্পদ কখনও বোঝা হবে না মোঃ শাহাদৎ হোসেন মানুষ হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রের উন্নতির মূলে থাকে মানুষ—যাকে আমরা মানব সম্পদ বলে থাকি। এই মানব সম্পদকে বোঝা মনে করলে তা হবে আমাদের জ্ঞানের ঘাটতি, দৃষ্টিভঙ্গির সংকীর্ণতা। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, এক সময় পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ছিল বর্তমান জনসংখ্যার অর্ধেক। তখন কর্মসংস্থানের সংকট ছিল না, কিন্তু খাদ্যের তীব্র অভাব ছিল। মানুষকে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হতো, অনেক ক্ষেত্রেই মৌলিক চাহিদা পূরণ করা যেত না। অথচ আজকের দিনে খাদ্যের ঘাটতি অনেকটাই কমে এসেছে। বরং কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে আলোচনা বেশি হয়। বাস্তবে দেখা যায়, উচ্চ শিক্ষিতদের বেকারত্বের হার বেশি হলেও অল্প শিক্ষিত বা দক্ষতাভিত্তিক কর্মীদের বেকারত্ব তুলনামূলক কম। এর মানে হলো—কর্মক্ষেত্র সব সময় নতুনভাবে তৈরি হয়, আর মানুষ তার দক্ষতার ভিত্তিতে সেখানে জায়গা করে নেয়। অনেক বিশেষজ্ঞ দাবি করেন যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) বিভিন্ন পেশার মানুষকে বেকার করে দেবে। আমি এই মতকে সঠিক মনে করি না। প্রযুক্তি নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচন করে, আবার মানুষের জন্য নতুন কাজের...

মানব জনমের স্বার্থকতা

:মানব জনমের স্বার্থকতা — মোঃ শাহাদৎ হোসেন মানুষের জীবন কেবল ভোগ-বিলাসের জন্য নয়, কিংবা কেবল নিজের বংশবিস্তার করার জন্যও নয়। এই কাজ তো অন্যান্য প্রাণীরাও করে থাকে। তবে মানুষকে আলাদা করেছে তার চিন্তা, প্রজ্ঞা, বিবেক এবং কর্মের মহত্ত্ব। তাই মানব জনমকে সার্থক করতে হলে কেবল দেহের প্রয়োজন মেটালেই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন মানবিক মূল্যবোধ ও দায়িত্বের চর্চা। মানুষ জন্ম নেয় এক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে। সেই উদ্দেশ্য হলো সমাজ, দেশ, মানবতা এবং বিশ্বকে কিছু দেওয়া। যে মানুষ কেবল নিজের ক্ষুদ্র চাহিদার ঘেরাটোপে আবদ্ধ থাকে, তার জীবন বৃথা হয়ে যায়। কারণ ইতিহাসে স্থান পায় সে-ই, যে নিঃস্বার্থ কর্মের মাধ্যমে অন্যের জীবন আলোকিত করেছে। নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে যে অন্যের কল্যাণে কাজ করেছে, মানব জনমের প্রকৃত স্বার্থকতা তাকেই স্পর্শ করেছে। আমরা যদি পৃথিবীতে আসার পর কোনো চিহ্ন রেখে যেতে না পারি, যদি মানুষের মুখে আমাদের নাম কৃতজ্ঞতার সাথে উচ্চারিত না হয়, তবে আমাদের জন্ম অর্থহীন হয়ে পড়বে। জীবন সীমিত হলেও কর্মের মহিমা সীমাহীন। একজন মানুষের কর্ম তার মৃত্যুর পরও তাকে বাঁচিয়ে রাখে। তাই মানব জনমকে সার্থক করতে হলে আমাদের উচিত— ...

স্মৃতিরা মরে না

স্মৃতিরা মরে না মোঃ শাহাদৎ হোসেন পৃথিবী হলো মানুষের আসা–যাওয়ার অস্থায়ী মঞ্চ। কেউ জন্মায়, কেউ চলে যায়। সময়ের স্রোতে মানুষ হারিয়ে গেলেও তাদের রেখে যাওয়া স্মৃতি কখনও মুছে যায় না। স্মৃতিই একমাত্র অবলম্বন, যা মানুষকে অতীতের সাথে বর্তমানের সেতুবন্ধন রচনা করে দেয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষণ আমরা যেভাবে কাটাই, তা ভবিষ্যতে আমাদের চারপাশের মানুষদের জন্য স্মৃতি হয়ে থেকে যায়। কারও হাসি, কারও পরিশ্রম, কারও ভালোবাসা কিংবা কারও সৎ কর্ম – সবকিছুই একদিন গল্প হয়ে বেঁচে থাকে। তাই প্রতিটি দিন আমাদের সততার সাথে কাটানো জরুরি, কারণ আমরা চাই বা না চাই, আমাদের কাজই হয়ে ওঠে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষণীয় উপাখ্যান। অনেকেই বলেন, মৃত্যু মানেই সবকিছুর শেষ। কিন্তু বাস্তবে মৃত্যু কেবল দেহের অবসান ঘটায়, আত্মার নয়। আর স্মৃতি হলো আত্মার বহিঃপ্রকাশ। এক মায়ের আদরের ডাক, এক শিক্ষকের জ্ঞানদানের মুহূর্ত, এক বন্ধুর আত্মত্যাগ—এসব কখনো সময়ের ভাঁজে হারিয়ে যায় না। বরং এগুলো মানুষকে অনুপ্রাণিত করে সৎ পথে চলতে। মানুষের সাথে মানুষের এমন কিছু কথোপকথন বা আচরণ থাকে যা খুব ছোট বা বিনা পরিশ্রমে করা হলেও, সেটি কারও জন্য হয়ে ওঠে জীবনব্যাপী ...