শিক্ষকতা পেশা নিরর্থক
শিক্ষকতা পেশা নিরর্থক
মোঃ শাহাদৎ হোসেন
শিক্ষকতা পেশাকে বলা হয় মহান পেশা। কারণ শিক্ষকই একটি জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি সত্যিই আমাদের শিক্ষার্থীদের নৈতিকভাবে গড়ে তুলতে পারছি? কেবল পাঠ্যবই মুখস্থ করানো বা ভালো ফলাফল করানোই যদি শিক্ষার উদ্দেশ্য হয়, তবে শিক্ষকতা পেশা ধীরে ধীরে তার মূল তাৎপর্য হারাচ্ছে।
আজকের সমাজে শিক্ষিত মানুষ চুরি করছে, ঘুষ নিচ্ছে, অনৈতিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে, দুর্নীতি করে রাষ্ট্রের ক্ষতি করছে। অথচ এরা সবাই কোনো না কোনো সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গণ্ডি পেরিয়েছে, শিক্ষকের কাছে পাঠ নিয়েছে। যদি শিক্ষিত মানুষই অশিক্ষিতদের মতো আচরণ করে, তবে কি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ নয়?
একজন শিক্ষকের প্রধান দায়িত্ব কেবল জ্ঞান বিতরণ নয়, বরং শিক্ষার্থীর অন্তরে নৈতিকতার আলো জ্বালানো। যদি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা দান করতে ব্যর্থ হন, তবে সেই শিক্ষা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি শিক্ষার্থীদের নৈতিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে না পারে, তবে সেটিও সমাজের জন্য কোনো উপকার বয়ে আনে না।
এক্ষেত্রে দোষ শুধু শিক্ষার্থীর নয়। শিক্ষার্থীর পাশাপাশি শিক্ষক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থাও সমানভাবে দায়ী। কারণ একটি দুর্নীতিবাজ, অনৈতিক মানুষ কেবল তার পরিবারকেই নয়, পুরো সমাজকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। আর এই ব্যর্থতার শেকড় নিহিত থাকে তার শিক্ষাজীবনের ভেতরে।
সুতরাং, শিক্ষকতা পেশা তখনই মহৎ, যখন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞানের পাশাপাশি সততা, মানবতা, ন্যায়নিষ্ঠা ও সৎ চরিত্র গড়ে তুলতে সক্ষম হন। অন্যথায় শিক্ষকতা পেশা নিরর্থক বলেই বিবেচিত হবে।
Comments
Post a Comment