অপরাধরা পরস্পর সর্ম্পকযুক্ত
অপরাধরা পরস্পর সর্ম্পকযুক্ত
মোঃ শাহাদৎ হোসেন, সাভার
মানব সমাজে অপরাধ একটি বহমান স্রোতের মতো। ছোট থেকে ছোট অপরাধের শিকড় যদি উপড়ে না ফেলা হয়, তবে তা বড় অপরাধের জন্ম দেয়। অনেকেই মনে করেন, সামান্য অন্যায় তেমন কোনো ক্ষতির কারণ নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো—সামান্য অপরাধই পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।
ভিক্ষাবৃত্তি যেমন একটি ঘৃণিত কাজ, তেমনি রাস্তায় বা অন্য কোথাও পড়ে পাওয়া জিনিস নিজের মনে করাও কি কম অপরাধ? আমরা প্রায়শই দেখি, কারও হারানো সামান সামগ্রী তুলে নিয়ে নিজের করে নেয়া হয়। এটি হয়তো প্রকাশ্যে চুরি নয়, কিন্তু এক প্রকার নীরব চুরি। এ ধরনের কাজ মানুষের মনে অসৎ সাহস জন্ম দেয়, যা পরবর্তীতে বড় অপরাধে রূপ নিতে পারে।
অনেকে অন্যের সম্পদের প্রতি লোভ করে—যা একধরনের অপ্রকাশিত অপরাধ। কিন্তু সেই লোভই যখন বাস্তবায়িত হয়, তখন সমাজে ঘটে বড় ধরনের ক্ষতি। উৎকোচ গ্রহণ বা ঘুষ নেওয়াও তাই এক ধরনের জুলম। এখানে কেউ হয়তো জোর করে কিছু কেড়ে নিচ্ছে না, কিন্তু অন্যায়কে মেনে নেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে। একদিকে পকেটমার সরাসরি ক্ষতি করে, অন্যদিকে ঘুষখোর নীরবে সমাজের ভিত দুর্বল করে দেয়। দু’জনের কার্যপদ্ধতি ভিন্ন হলেও অপরাধের চরিত্র একই।
ছিনতাই, ঘুষ গ্রহণ, দুর্নীতি—সবই একই সূত্রে গাঁথা। একটি অপরাধ আরেকটি অপরাধকে জন্ম দেয়। আজকের লোভ কালকের চুরি, আজকের ঘুষ কালকের দুর্নীতি, আজকের অনৈতিকতা কালকের অপরাধ সাম্রাজ্য।
এ অবস্থায় আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো অপরাধকে শুরুতেই প্রতিরোধ করা। পারিবারিক শিক্ষা হতে হবে সৎ জীবনের প্রথম পাঠ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শুধু জ্ঞান নয়, নৈতিকতা গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজকে অপরাধবিরোধী মানসিকতায় গড়ে তুলতে হবে।
কারণ, অপরাধ কখনো এককভাবে সীমাবদ্ধ থাকে না—
একটি অপরাধ আরেকটি অপরাধের জন্ম দেয়।
Comments
Post a Comment